গল্প: ভিখারির মুখে হাসি
এক সন্ধ্যাবেলা, শহরের ব্যস্ত রাস্তায় ট্রাফিক লাইটের পাশে বসে ছিল এক বৃদ্ধ ভিখারী। তার গায়ে ছেঁড়া চাদর, চোখে গভীর ক্লান্তি, আর মুখে এক অদ্ভুত শান্তি। প্রতিদিনের মতোই লোকজন হেঁটে যাচ্ছিল, কেউ টাকাপয়সা দিচ্ছিল, কেউ অবহেলা করছিল।
এক শিশু, মাত্র ছয় কি সাত বছর বয়স হবে, মায়ের হাত ধরে রাস্তা পার হচ্ছিল। হঠাৎ সে থেমে গেল। ভিখারির দিকে তাকিয়ে বলল,
— “মা, উনাকে একটা চকলেট দেব?”
মা একটু চমকে গেলেন, তারপর ব্যাগ থেকে একটা ছোট চকলেট বের করে দিলেন ছেলেটির হাতে। ছেলেটি ছোট পায়ে এগিয়ে গিয়ে চকলেটটা বৃদ্ধ ভিখারীর হাতে দিল।
ভিখারী এক মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল। তারপর এমন এক হাসি ফুটল তার মুখে—যেখানে ছিল না কোনো অভাবের ছাপ, ছিল শুধু কৃতজ্ঞতা আর আনন্দ।
সে বলল,
— “বাবা, তুই তো আমার দিনের আলো।”
শিশুটিও হেসে বলল,
— “হাসলে আপনাকে সুন্দর লাগে!”
সেই মুহূর্তটা দেখে পথচারীদের কেউ কেউ থেমে গেল। এক ভদ্রলোক নীরবে পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে ভিখারীর কৌটায় রেখে গেলেন। এরপর আরেকজন এগিয়ে এল, তার পুরোনো জ্যাকেট খুলে ভিখারীর কাঁধে চাপিয়ে দিল।
সন্ধ্যার আলো ক্রমশ কমে এল, কিন্তু সেই বৃদ্ধ ভিখারীর মুখের হাসি যেন চারপাশ আলোকিত করে রাখল।
শেষ কথাঃ
একটা ছোট্ট ভালোবাসার কাজ কারও জীবনে আনন্দের জোয়ার এনে দিতে পারে। ভিখারীর মুখের সেই হাসি ছিল প্রমাণ—মানুষ এখনও মানুষের জন্য কিছু করতে পারে।
এন্টার করুন
0 Comments