চিঠি ছিল, উত্তর ছিল না গল্প


 চিঠি ছিল, উত্তর ছিল না

গ্রামের শেষ প্রান্তে ছোট্ট এক কুঁড়েঘর। সেখানে থাকত মৃণাল — নীরব, চুপচাপ এক যুবক। কেউ তাকে বেশি চিনত না, কারণ সে কারো সঙ্গে কথা বলত না। গ্রামের মানুষ জানত, সে প্রতিদিন সন্ধ্যায় নদীর পাড়ে বসে কিছু একটা লেখে। আসলে সে প্রতিদিন লিখত চিঠি — একজনের জন্য। নাম ছিল তার "সীতা"। শহর থেকে গ্রামে আসা এক তরুণী, শিক্ষিকার কাজ করতে। বছরখানেক আগে গ্রামের স্কুলে পোস্টিং পেয়েছিল সে। মৃণাল তখনো স্কুলের দেয়াল আঁকত, রঙ করত, ক্লাসের বেঞ্চ মেরামত করত। সীতা শহরের ভাষায় কথা বলত, চোখে ছিল স্বপ্নের দীপ্তি। মৃণালের জীবনে যেন আলো এসে পড়েছিল। সে কিছু বলতে পারেনি কখনো — শুধু একদিন একটা চিঠি লিখে দিয়েছিল সীতার ব্যাগে। তারপর আর কোনো কথা হয়নি। পরদিন সীতা হঠাৎই শহরে ফিরে যায়, বদলি হয়ে যায় কোনো বড় স্কুলে। মৃণাল ভাবত, হয়তো তার চিঠি পড়ে কিছু বলবে। কোনোদিন, কোনোভাবে, একটা উত্তর আসবে। সেই আশায় সে লিখে চলত চিঠি — প্রতিদিন একটা করে। লিখত, “আজ তোমার দেখা পাইনি। জানো, স্কুলের বকুল গাছটা তোমায় খুঁজছে।” আবার লিখত, “যদি কখনো ফিরে আসো, আমি এখানেই থাকব।” তবে চিঠির উত্তর আর কোনোদিন আসেনি। তিন বছর কেটে গেছে। সীতা আর কখনো ফিরে আসেনি। একদিন, হঠাৎই গ্রামে আসা এক পর্যটক নদীর পাড়ে হেঁটে হেঁটে মৃণালের পুরোনো ঘরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সেখানে একটা কাঠের বাক্সে শত শত চিঠি দেখে সে অবাক। ওপরে লেখা ছিল—

Post a Comment

0 Comments