গল্প: “মোবাইল ছাড়া একদিন”
সকাল ৮টা। ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই সজলের হাত মোবাইলের খোঁজে গেল। কিন্তু, বিছানার পাশটা ফাঁকা। চারপাশে খুঁজে দেখে মনে পড়লো—কাল রাতে মা বলেছিলেন,
“সারাদিন ফোনে ঢুকে থাকিস! কাল একটা দিন মোবাইল ছাড়া কাটাস তো দেখি!”
সজল তখন হাসতে হাসতে রাজি হয়ে গিয়েছিল। এখন বুঝছে কথাটা বলা যত সহজ, পালন করা ততটাই কঠিন।
প্রথমেই চা খেতে খেতে আকাশের দিকে তাকাল। পাখিদের ডাক, গাছের পাতায় বাতাসের দোলা—সব কিছু এতদিন মিস করছিল! হঠাৎ পাড়ার কাকু ডাকলেন,
“এই সজল, একটু বাজার থেকে আনাজপাতি আনবি?”
সজল তো অবাক! আগে হলে বলত, “এক্সাম আছে কাকু।” কিন্তু আজ সময় তো আছেই!
বাজার ঘুরে আসার পর মা অবাক হয়ে বললেন,
“বাহ, মোবাইল না থাকলে তো তুই বেশ অ্যাকটিভ!”
দুপুরবেলা বইয়ের তাক থেকে তুলে নিল পুরনো একটা উপন্যাস—সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা। গল্পে ডুবে গিয়ে সময় কিভাবে পেরিয়ে গেল, টেরই পেল না। বিকেলে বন্ধু রাহুল ডাকতে এলো। দুজনে হাঁটতে হাঁটতে মাঠে গেল, ব্যাট-বল হাতে তুলে খেলল ছোটদের সঙ্গে।
রাত ৯টা। সজল খেতে বসে বলল,
“আজকের দিনটা খুব ভালো গেল মা। মনে হচ্ছে, অনেক কিছু ‘দেখলাম’ যা এতদিন ‘মিস’ করছিলাম।”
মা হাসলেন,
“তাই তো বলি, জীবনটা মোবাইলের পর্দার বাইরে অনেক রঙিন।”
সজল ঠিক করল,
প্রতিমাসে একদিন ‘মোবাইল ফ্রি ডে’ পালন করবে।
হয়তো তখনই জীবনকে আরও ভালোভাবে ‘ক্যাপচার’ করা যাবে—কোনো ক্যামেরা ছাড়া!
এন্টার করুন
আপনি পাঠিয়েছেন
0 Comments